
প্রকাশিত: Sun, Jun 2, 2024 3:26 PM আপডেট: Tue, Jul 1, 2025 5:30 PM
প্রশ্ন প্রত্যেক মানুষের শান্তি, মর্যাদা, আনন্দ ও খুশির জীবন
আজিজুর রহমান আসাদ
সত্য, মিথ্যা, যুদ্ধ, শান্তি ও খুশি। ‘ঈদ’ মানে খুশি, অন্তত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। নতুন জামা কাপড়, ভালো খাবার এদের খুশির একটি উৎস। শুধু খাদ্য ও বস্ত্র পেলেই মানুষ জীবনে খুশি হতে পারে না, তাঁর মর্যাদা চাই, শান্তি চাই, আনন্দের উপকরণ ও সামাজিক পরিবেশ চাই। বাস্তবত দুনিয়াব্যাপী যুদ্ধ বন্ধ করা চাই। আজকের দিনে যেকোনো স্থানীয় যুদ্ধ আর স্থানীয় নয়। সকল যুদ্ধই বৈশ্বিক। যুদ্ধের প্রভাবও সকলের জীবনে কম বেশি পড়ছে। ফলে ব্যক্তিগত শান্তিও এখন নির্ভর করছে বৈশ্বিক যুদ্ধের বাস্তবতায়। যুদ্ধ মানুষকে সত্য ও মিথ্যার অবস্থান থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। অন্যভাবে বললে, শান্তির জন্য আপনি কাকে পছন্দ করবেন? সত্যবাদী না মিথ্যেবাদীকে? আসলে শান্তির জন্য সত্য ও মিথ্যা অপ্রাসঙ্গিক। মানে আপনাকে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য করা বা না করা অর্থহীন।
যুদ্ধের জন্য মানুষ নিজের নিজের পক্ষে যুক্তি দেয়। যেমন ইউক্রেনে যে যুদ্ধ চলছে, ন্যাটোর সমর্থেনে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে, এই যুদ্ধে কোনো পক্ষ ‘সত্য’ বলছে, সেটা জানার চেষ্টা করা যেতে পারে, কিন্তু তা শান্তির জন্য কোনো কাজে লাগবেনা। শান্তির পক্ষে কাজ করতে হলে, যাত্রাপালার বিবেকের অভিনয়ের সুযোগ নেই। আপনাকে দুই পক্ষের সত্য মিথ্যা থেকে আলাদা তৃতীয় অবস্থান নিতে হবে। যেমন আপনাকে বুঝতে হবে, ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে একটি বয়ান ইউক্রেন+ন্যাটোর, অন্য বয়নাটি রাশিয়ার। আপনাকে এই দুই বয়ান থেকে দ্বন্দ্ব কী নিয়ে তা আবিষ্কার করতে হবে। কে ‘সত্য’ বলছে আর কে ‘মিথ্যে’ বলছে আপনি এই বিচার করতে বসেননি।
আপনি একজন শান্তিকর্মী হিসেবে, যদি যুদ্ধ বন্ধ করতে চান, তাহলে দুই পক্ষের অবস্থান, স্বার্থ এবং দৃষ্টিকোন বুঝতে হবে। দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসন ও রূপান্তরের পন্থা নিতে হবে। সৎ মানুষদের একটি প্রবণতা তথাকথিত ‘সত্যের’ পক্ষে দাঁড়ানো। আসলে এই আবেগগত পক্ষপাতিত্ব এর কারণেই ‘প্রোপাগান্ডা’ নামক কৌশল কাজে লাগে, রাজনীতিবিদ ও অস্ত্র ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে। তবে মিথ্যের পক্ষেও দাঁড়ানো কিন্তু কখনো সঠিক হতে পারে, যদি তা মানুষের জীবন, শান্তি ও খুশি বা আনন্দ নিশ্চিত করে। মিথ্যে বলা কখনো কাজের হতে পারে। মিথ্যে বলা ভালো হতে পারে, এই নিয়ে একটি বিখ্যাত গল্প আছে। চার্চের এক ফাদার সত্যবাদী হিসেবে বিখ্যাত। একদিন এক লোক এসে তাঁর চার্চের বেদির পেছনে লুকালো। কিছু পরে একদল ডাকাত এলো তাঁকে হত্যা করার জন্য। ফাদার অনেক কষ্ট করে, মিথ্যে বললেন, তিনি কাউকে দেখেননি। ডাকাতেরা চলে গেলো। একজন মানুষের জীবন রক্ষা হলো, ফাদারের মিথ্যে বলার কারণে। বার্লিনে, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরে, পরিচিত শান্তি কর্মীরা খুবই অসহায় বোধ করছিলেন, কারণ এদের মতে দুই দিকেই ‘প্রোপাগান্ডা’ চলছে, কাকে বিশ্বাস করা যায়? কে সত্য বলছে? রাশিয়া না ন্যাটো? ন্যাটোর প্রোপাগান্ডা বিশ্বাস করার জন্য আমি এক বন্ধুকে অপমানও করেছি, রেগে ছিলাম বলে। পরে, মনে হয়েছে, এই সত্য মিথ্যার বিতর্কে যাওয়াই অকার্যকর।
কারণ এই বিতর্ক আসলে মূল প্রশ্ন যুদ্ধ বন্ধকরা ও শান্তির আলোচনা থেকে সরে যাওয়া। একই ব্যাপার হামাস-নেটেনিয়াহু সহিংসতার ব্যাপারেও বলা যায়। সত্য বা মিথ্যে দিয়ে যুদ্ধ শুরু বা বন্ধ হয় না, বন্ধ হয় দ্বন্দ্ব নিরসন করার মধ্য দিয়ে। বিবদমান পক্ষদের দ্বন্দ্ব নিরসন করে। ধর্মবিশ্বাস কি সত্য না মিথ্যে, এই সত্য মিথ্যার বোধ দিয়ে ধর্মীয় সন্ত্রাস হয়না, হয় বাস্তব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ক্ষমতার স্বার্থের দ্বন্দ্বে। তাহলে এই দ্বন্দ্ব বোঝা জরুরি, যদি আমরা শান্তি চাই। মানুষের জীবনে ‘খুশি’ চাই। মানুষকে ‘খুশি’ হতে হলে, ঈদ উদযাপন করতে হলে, তাঁর জন্য একটি যুদ্ধহীন, সহিংসতাহীন, শান্তির, আনন্দময় সামাজিক পরিবেশ দরকার। আনন্দবাজার পত্রিকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক দূরবস্থার একটি চিত্র দেখলাম। ভাবছি, এদের অনেকের জীবনে ‘খুশি’ হওয়ার মতো অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা কি আছে? হিন্দুত্ববাদী মোদীর ভারতে সংখ্যালঘুদের ঈদ বা ‘খুশি’ থাকা কেমন? জানার চেষ্টা করছি। হাতে পেলাম ইবরহম গঁংষরস রহ ঐরহফঁ ওহফরধ, ২০২৩ সালে ঐধৎঢ়বৎ ঈড়ষষরহং প্রকাশ করেছে, তরধ টং ঝধষধস এর লেখা। আগেই বলেছি, প্রশ্ন সত্য বা মিথ্যে বয়ানের নয়। প্রশ্ন প্রত্যেক মানুষের শান্তি, মর্যাদা, আনন্দ ও খুশির জীবন। দুনিয়াকে এমনভাবে বদলে দেওয়া যাতে সকল মানুষ বেঁচে থাকে, শান্তি ও খুশিতে। লেখক: গবেষক
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
